arjun biswas
arjunbiswas
অনেক দুখের মাঝে একটু সুখের পরশ

কবিতার মেলা

বনলতা সেন - জীবনানন্দ দাস


হাজার বছর ধরে আমি পথ হাঁটিতেছি পৃথিবীর পথে,
সিংহল-সমুদ্র থেকে নিশীথের অন্ধকারে মালয়-সাগরে
অনেক ঘুরেছি আমি; বিম্বিসার-অশোকে

র ধূসর জগতে
সেখানে ছিলাম আমি; আরও দূর অন্ধকারে বিদর্ভ নগরে;
আমি ক্লান্ত প্রাণ এক, চারিদিকে জীবনের সমুদ্র সফেন,
আমারে দু-দন্ড শান্তি দিয়েছিল নাটোরের বনলতা সেন ।
চুল তার কবেকার অন্ধকার বিদিশার নিশা,
মুখ তার শ্রাবস্তীর কারুকার্য; অতিদূর সমুদ্রের পর
হাল ভেঙ্গে যে নাবিক হারায়েছে দিশা
সবুজ ঘাসের দেশ যখন সে চোখে দেখে দারুচিনি-দ্বীপে
র ভিতর,
তেমনি দেখেছি তারে অন্ধকারে; বলেছে সে, 'এতদিন কোথায় ছিলেন?'
পাখির নীড়ের মত চোখ তুলে নাটোরের বনলতা সেন।
সমস্ত দিনের শেষে শিশিরের শব্দের মত
সন্ধ্যা আসে; ডানার রৌদ্রের গন্ধ মুছে ফেলে চিল;
পৃথিবীর সব রঙ নিভে গেলে পান্ডুলিপি করে আয়োজন
তখন গল্পের তরে জোনাকির রঙে ঝিলমিল;
সব পাখি ঘরে আসে - সব নদী - ফুরায় এ জীবনের সব লেনদেন;
থাকে শুধু অন্ধকার, মুখোমুখি বসিবার বনলতা সেন।
মেঘলা লাগে


-মন খারাপের একেকটা দিন নিকষ কালো মেঘলা লাগে
কেউ বোঝেনা এই আমাকে, আমারও যে একলা লাগে
মাঝে মাঝে বৃষ্টি দেখে হাত বাড়ানোর ইচ্ছে জাগে
ভেতর ভেতর যাই পুঁড়ে যাই, কেউ বোঝে না আমার আগে।

ভুল শহরে এই আমি যে ভুল মানুষের সংগ খুঁজি
কেউ না জানুক তুমি জানো, তোমায় আমি ভালো বুঝি।

হেসে ছিলাম প্রাণটা খুলে, সেটাও ছিলো বছর আগে
ভেতর ভেতর যাই পুঁড়ে যাই, কেউ বোঝে না আমার আগে।

মন খারাপের একেকটা দিন নিকষ কালো মেঘলা লাগে
কেউ বোঝেনা এই আমাকে, আমারও যে একলা লাগে
মাঝে মাঝে বৃষ্টি দেখে হাত বাড়ানোর ইচ্ছে জাগে
ভেতর ভেতর যাই পুঁড়ে যাই, কেউ বোঝে না আমার আগে।

মাঝে মাঝে প্রশ্ন জাগে, সবাই কি হয় একি রকম
ভালোবাসার কথা বলো, এটাই তোমার সবচেয়ে কম
কার অভিমান কে যে করে, কে যে থাকে ভিষণ রাগে,
ভেতর ভেতর যাই পুঁড়ে যাই, কেউ বোঝে না আমার আগে।

মন খারাপের একেকটা দিন নিকষ কালো মেঘলা লাগে
কেউ বোঝেনা এই আমাকে, আমারও যে একলা লাগে
মাঝে মাঝে বৃষ্টি দেখে হাত বাড়ানোর ইচ্ছে জাগে
ভেতর ভেতর যাই পুঁড়ে যাই, কেউ বোঝে না আমার আগে

---কাজী নজরুল ইসলাম
চাঁদ হেরিছে চাঁদমুখ তার সরসীর আরশিতে
ছোটে তরঙ্গ বাসনা ভঙ্গ সে অঙ্গ পরশিতে।

হেরিছে রজনী রজনী জাগিয়া
চকোর উতলা চাঁদের লাগিয়া
কাঁহা পিউ কাঁহা ডাকিছে পাপিয়া
কুমুদীরে কাঁদাইতে।

না জানি সজনী কত সে রজনী
কেঁদেছে চকোরী পাপিয়া
হেরেছে শশীরে সরসী মুকুরে
ভীরু ছায়া তরু কাঁপিয়া।

কেঁদেছে আকাশে চাঁদের ঘরণী
চিরবিরহিণী রোহিণী ভরণী
অবশ আকাশ বিবশা ধরণী
কাঁদানীয়া চাঁদিনীতে।।





arjun biswas
This website was created for free with Own-Free-Website.com. Would you also like to have your own website?
Sign up for free